ভারতের নিম্নমানের চা-পাতায় সয়লাব বাজার
ভারত থেকে অবৈধভাবে নিম্নমানের চা-পাতা দেশে প্রবেশ করায় হুমকির মুখে পড়েছে হবিগঞ্জের চা বাগানগুলো। প্রতিকেজি চা-পাতার মূল্য এখন নেমে এসেছে ২শ’ টাকারও নিচে। যা আগে ছিল ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা। অপরদিকে, এ বছর উৎপাদন বাড়ায় চায়ের বাজার মূল্য নিয়ে বিপাকে বাগান কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবলের ২৪টি বাগানে চায়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ভারত থেকে নিম্নমানের চাপাতা অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় দেশীয় চা-পাতার মূল্য পড়তে শুরু করেছে। গেলবছর প্রতিকেজি চা গড়ে ২শ’ ৬০ থেকে ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এবার তা কমে ২শ’ টাকার নিচে নেমে এসেছে। অবৈধ পথে ভারত থেকে চা পাতা আসা বন্ধ করা না গেলে বন্ধ হয়ে যাবার হুমকিতে পড়েছে হবিগঞ্জের চা শিল্প।

বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনে চা একটি অন্যতম অপরিহার্য উপাদান। ভোরে নাস্তার টেবিল থেকে শুরু করে সবখানেই চায়ের কদর। চা ছাড়া যেন কেউ চলতেই পারেন না। চায়ের চাহিদা বাড়লেও চায়ের মান উন্নয়ন নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। নিম্নমানের ভারতীয় কেমিক্যালযুক্ত চায়ে বাজার সয়লাব হয়েছে। চোরাপথে আসা ভারতীয় চায়ের জমজমাট ব্যবসা চলছে শহরসহ জেলার ৬টি উপজেলার পল্লী এলাকায়।
দেশী চায়ের তুলনায় দাম কম হওয়ায় জেলার হাটবাজার ও গ্রামগঞ্জে দোকানদারেরা ভারতীয় চা বিক্রি করছেন। এতে দেশী কোম্পানির চা বিক্রি যেমন কমে গেছে। তেমনি ভারতীয় নিম্নমানের চা পান করে কিডনীসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক চা পানকারীরা।
দেশের চা শিল্প ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে ভারতীয় একটি চক্র। এদেশীয় দোসররা ও সংঘবদ্ধ চোরাচালানী চক্র দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে নিম্নমানের এ চা।
দেশের সীমান্ত এলাকাসহ সীমান্তের ‘চোরাপকেট’ দিয়ে দেদারসে পাচার হয়ে আসছে ভারতীয় নিম্নমানের চা। সীমান্তের চোরাপকেটগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় এই নিম্নমানের চা পাচার হয়ে আসছে। সংঘবদ্ধ পাচারকারীরা সড়ক ও রেলপথ চা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে।
উৎপাদন বেশী হওয়ার পর চায়ের দাম আরো কমায় এখন হতাশ বাগান কর্তৃপক্ষ। অবৈধ পথে ভারতীয় চা আমদানী হওয়ায় বাংলাদেশের চা শিল্প লোকসানে পড়েছে বলে জানালেন বাগান কর্মকর্তারা।
চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালিয়ে পুলিশ এরই মধ্যে বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চা-পাতা জব্দ করেছে।
গত বছর হবিগঞ্জে প্রায় ৭৭ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৯২ লাখ কেজি চা।
Related Posts
« Gostoria signature menus for our valued customers Chemical Free Tea in Bangladesh »